বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪

    শিশু নির্যাতন

শিক্ষা  লাভের  অধিকার 

আছে  সকল  শিশুর 

তবে  কেন  রাস্তাঘাটে 

ঠেলছে  ঠেলা  কিশোর।

পেটের  দায়ে কেউবা  তাদের

ভাঙছে  দেখি  পাথর

অনাহারে  আছে শিশু

ক্ষুধার  জ্বালায় কাতর।

ভাত  কাপড়ের আশায় শিশু 

নানান  কাজে  লিপ্ত

নির্যাতনের  খড়গ চালায়

হয়ে  মালিক  ক্ষিপ্ত ।

শিশুর  প্রতি সহিংসতা 

করতে দেখি যাদের 

উঁচু তলার  মানুষ  হলেও 

ঘৃণা  জানাই  তাদের।


   মানুষ হবার শিক্ষা

ভোরের  পাখি  ডাকে  সোনা

ঘুম থেকে ওঠো

নামাজ  কালাম শিখতে 

তুমি  মক্তবেতে ছোট।

স্কুল  কলেজে  পড়ে তুমি

হবে অনেক  বড়

তারই  সাথে  ধর্মকর্ম

শিক্ষা  লাভ  কর।

বড় বড় ডিগ্রী নিয়েও 

হয় যে  অমানুষ

ভালো  মন্দ  বুঝার  পরও

হয়  না  তাদের  হুশ।

ধর্মকর্ম  শিখার  পরও 

মানে  না সে ধর্ম

জ্ঞানী  বলে দাবি করে

করে  অপকর্ম।


 বৃদ্ধাশ্রম

পিতা-মাতা  বৃদ্ধ এখন 

বয়স গেছে বেড়ে

উপার্জন করে না তাই

রাখছ অনাদরে ।

যেদিন তুমি শিশু ছিলে

করনি রোজগার 

কত  কি যে করেছে সেদিন 

ভাবছ কী একবার ?

এক ঘরে থাকতে যখন 

সবাই মিলেমিশে

সর্দি-কাশি জ্বর হলেই 

থাকতো পাশে বসে।

কোন দিনও শেষ হবে না

পিতা-মাতার দেনা

তোমার সুখের ঐশ্বর্য্য সব 

তাদের কষ্টে কেনা । 

আজকে তারা বৃদ্ধ তাই 

হয় না ঘরে ঠাঁই 

বৃদ্ধাশ্রমে থাকে তারা 

সন্তান পাশে নাই ।

বৃদ্ধাশ্রম প্রবীণ নিবাস 

হালজামানার ফ্যাশন 

এসব কিছুর নেই প্রয়োজন 

যদি থাকে পেশন।


 দেশের মাটি

শিশির ভেজা সবুজ মাঠ 

জুড়ায় আমার আঁখি 

সবুজ শ্যামল এদেশটাকে 

অবাক চেয়ে দেখি । 

এই দেশের আলো-বাতাস 

সজীব করে প্রাণ

পাখির কণ্ঠে শুনতে পাই 

মিষ্টি সুরে গান ।

ক্ষেত খামারে সোনার ফসল

দেখে হই আনমনা

পাকা ধানের সোনালী রূপ 

কৃষক ভাবে তাই সোনা ।

গর্বে আমার বুক ভরে যায়

জন্মেছি এই দেশে 

জীবন আমার কাটে যেন

দেশকে ভালোবেসে ।


 শীতের পিঠা

হাড়  কাঁপানো এই শীতে 

গরম কাঁথায় আরাম 

রাতের বেলায় মশার জ্বালায় 

ঘুম হয়ে যায় হারাম। 

খেজুর রসের পায়েশ খেতে

লাগে দারুণ মিঠা

তার চেয়ে মজার খাবার 

গরম ভাপা পিঠা । 

পুলি পিঠার স্বাদের কথা

বলতে কি আর হয় 

কলা পিঠা শীতের পিঠা 

সবাই শুনি কয়।



    মনুষ্যত্বের শিক্ষা

স্বাধীন দেশের রাজপথে

আজও ফুটে গুলি

এত বড় লজ্জার কথা

কার কাছে বলি।

দেশের বড় বিদ্যালয়ে

পড়তে আসে যারা

অস্ত্র  হাতে সন্ত্রাসী  কাজ

করে  দেখি তারা।

কলম খাতা রেখে তারা

অস্ত্র নিয়ে হাতে

সন্ত্রাসী  কাজ করে এখন

দিনে কিবা  রাতে।

আদব কায়দার শিক্ষা এখন

নেয় না দেখি তারা

ছাত্র শিক্ষক সম্পর্কের 

বদলে গেছে ধারা।

ন্যায়নীতি সম্প্রীতির

শিক্ষা  কী নেয় তারা

কি দাম আছে এমন শিক্ষার

মনুষ্যত্ব ছাড়া ? 


সোনামণি

আব্বু বলে পড়রে সোনা

আম্মু বলে মনদে

পড়া লেখার চাপে সোনা

পড়তে বসে কানদে।

সোনামণির ঘুম ভাঙেনি

মা বলে তুই ওঠ

বাবা বলে সময় যে যায়

কোচিং করতে ছুট।

তড়িঘড়ি  করে  সোনা

নাস্তা খেয়ে কিছু

ছুটছে বেদম কোচিং করতে

মা চলছে তার পিছু।

কোচিং করে বাড়ি ফিরে

যাচ্ছে আবার স্কুলে

একটু সময় পায় কী সোনা

যে সময় সে খেলে ?



   আগডুম বাগডুম

পরীর দেশের গল্প শোনার 

দিন হয়েছে গত

পালটে গেছে ধ্যান ধারণা

বদলে গেছে মতও।

আবিষ্কারের নেশায় লোকের

দু’চোখে নেই ঘুম

তবে শিশু পড়বে কেন

আগডুম বাগডুম।

শক্তি-সাহস মেধা-মনন

নয় মোটেও অল্প

কেন শিশু পড়বে তবে

চাঁদের বুড়ির গল্প।

নীতির  শিক্ষা নেই যেখানে

জ্ঞানের ভা-ার শূন্য

কল্পলোকের গল্প কথায়

হয় না কোন পুণ্য।

বিশ্বটাকে দেখতে হবে

এবার দুচোখ খোলে

কাজের কথা বলতে হবে

কল্প কথা ভুলে।


  স্বজন

বাবা  আমার চোখের  মণি

মা আমার  প্রাণ

কোন দিনও  শোধ  হবে না

তাদের অবদান।

নানা  ভাইয়ের স্নেহের মাঝে

নীতির  শিক্ষা  পাই

নানুমণির  আদর  সোহাগ

তুলনা  যার নাই।

দাদা-দাদীর স্নেহের কথা

বলবো  কী  আর আমি

আমার থেকে  তাঁদের  কাছে

কিছুই তো  নয় দামী ।

সহপাঠী  খেলার  সাথী

আছে আমার স্বজন

আমার  মতো এতো  ভালো

আছে  আর  ক'জন ?

সবার  ভালোবাসা  পেয়ে

জীবন আমার ধন্য

দু'হাত তুলে দোয়া করি

তাই  সকলের  জন্য।


     পথশিশু

ধনী লোকের সন্তানেরা 

পায় অনেক আদর

বাবা-মা নেই যাদের

নেই তাদের কদর ।

রাস্তা-ঘাটে  ফুটপাতে

তাদের আবাসস্থল

ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদে

ফেলে চোখের জল। 

অন্ন-বস্ত্র চিকিৎসা

পায় না এসব কিছু 

সুযোগ পেলে এরাও পারে

করতে ভালো কিছু । 

পথশিশু নাম দিয়েছে

আজকে এদের বিশ্ব 

সাহায্যের  হাত বাড়ালে

পাল্টে যাবে দৃশ্য।


 বিজয়নিশান

বিজয়ের  লাল পতাকা

উড়ে আকাশপানে

যুদ্ধ করে এই পতাকা

বীর বাঙালি আনে।

লাল সবুুজের এই পতাকা

যাদের রক্তে  মাখা

ইতিহাসের পাতায় আছে

তাদের কথা লেখা।

দেশকে ভালোবেশে যারা

দিলো  তাদের প্রাণ

তাদের  কঠিন ত্যাগের ফসল

উড়ে বিজয় নিশান।


 মাতৃ ভাষা

আমার ভাই শহীদ হলো

দেশকে ভালোবেসে 

বাংলা ভাষা  স্বাধীন  হলো

ফেব্রুয়ারি মাসে।

বাংলা ভাষা ছিলো তখন 

আগ্রাসনের মুখে 

সালাম,বরকত জীবন দিলো 

লাগলো  গুলি  বুকে ৷

রক্তে ভেজা এই মাটিতে

আছেন শহীদ শুয়ে 

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ

শ্রদ্ধা জানাই নুয়ে। 

বাংলা মোদের মাতৃ ভাষা

শিখি মায়ের কোলে 

বাংলা  ভাষা চর্চা করতে 

না যাই যেন ভুলে ।


 প্রশ্নপত্র ফাঁস

প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়

অভিভাবক অসন্তোষ

দেখেও যেজন চুপ করে রয়

তার কখনও হয় না হুশ।

দায় স্বীকার করে না কেও

সবাই ধরে পরের দোষ

শিক্ষা নিয়ে বানিজ্য হয়

প্রশ্ন হাতায় দিয়ে ঘুষ।

প্রশ্ন ফাঁস করে লোকে

নানান রকম কৌশলে

অপরাধী  পার পেয়ে যায়

বলতে পার কার বলে ?

প্রশ্ন ফাঁসের সোনামীতে

ক্ষতিগ্রস্থ  হয় জাতি

প্রশ্ন ফাঁস করে যেলোক

ঘৃণা জানাই তার প্রতি।



 বাজারদর

সকল পণ্যের মূল্য বাড়ছে

দেখছে সবাই স্পষ্ট

খেতে পরতে চলতে লোকের

হচ্ছে ভীষণ কষ্ট।

নুন আনতে পান্তা ফোরায়

এমন যাদের হাল

চাল ডাল কিনতে তারা

হচ্ছে নাজেহাল।

মাছ তরকারী চালের বাজার

এমন যেন আগুন 

কাঁচামরিচ কেনা দায়

কিনবে কী  আর বেগুন ?

পিঁয়াজ রসুন আলু পটল

না কিনলে কী চলে 

মাথায় পানি ঢালতে হয় 

মাছবাজারে গেলে।

পিঁয়াজের দাম আজকে বেশি 

কমবে হয় তো কাল

ভাবতে ভাবতেই আমরা সবাই

হচ্ছি নাজেহাল।


    মানুষের জয়

ছুটছে মানুষ গ্রহান্তরে

উড়ছে আকাশপানে

এই পৃথিবীর অনেক কিছু

মানুষ এখন জানে।


বরফশীতল হিমালয়

করছে মানুষ জয়

যাচ্ছে মানুষ মঙ্গলগ্রহে

পায় না মোটেও ভয়।


অজানাকে জানতে মানুষ

যাচ্ছে সাগরতলে

সভ্যতার এই নবযাত্রা

তাদের শ্রমের ফলে।


আবিষ্কারের নেশায় মানুষ

দিচ্ছে আজো প্রাণ

তাই তো সবাই মানব জাতির

গাইবো জয়োগান।


 খোদার ঘর

ওই দেখা  যায় তালগাছ

ওই যে খোদার ঘর

খোদার ঘরে যারে মুমিন

নামাজ কালাম পড়।

বটগাছ তো দেখতে মোটা

তালগাছটা উঁচু

অবুঝ লোকে যায় সেখানে

চাইতে আনেক কিছু।

খোদার ঘরে নামাজ পড়ে

দু’হাত তুলে চাও

দুঃখে আছি কষ্টে আছি

আমায় শান্তি দাও।


 বোতলজাত পানীয় 

কাঠফাটা রোদ দুপুর বেলা 

দেহে আসে ক্লান্তি

একটু পেলে শীতল বাতাস

লাগে অনেক শান্তি । 

এই গরমে একটু আরাম

সবাই পেতে চায়

পেপসি ফান্টা নানান জুস 

তাই তো লোকে খায়। 

ক্ষতিকারক এসবকিছু

নাই সকলের জানা

বোতলজাত পানীয়সব 

করতে হবে মানা ।

ডাবের পানি তাজা ফলে 

আছে অনেক পুষ্টি 

দামে সস্তা এসব খাবার 

মহান আল্লাহর সৃষ্টি।


   শিক্ষকের অবদান

নেতা  বলো  আমলা বলো 

শিক্ষক সবার গুরু 

জাতি গড়ার কাজটা প্রথম 

তাদের  হাতে শুরু।

মন্ত্রী,এমপি,জজ,বেরিস্টার

শিক্ষকেরই ছাত্র 

সকল শ্রেণির লোকের  কাছে

ভালোবাসার পাত্র।

জ্ঞানের সাধক হয়ে তাঁরা 

শিক্ষা করেন দান

মানুষ  গড়ার কারিগর

নিবেদিত প্রাণ।

কোন কিছুই হয় না তুল্য

শিক্ষকের সমান

সবার কাছে মান্যবর

আছে তার প্রমাণ


 দেশের মাটি

শিশির ভেজা সবুজ মাঠ 

জুড়ায় আমার আঁখি 

সবুজ শ্যামল এদেশটাকে 

অবাক চেয়ে দেখি । 

এই দেশের আলো-বাতাস 

সজীব করে প্রাণ

পাখির কণ্ঠে শুনতে পাই 

মিষ্টি সুরে গান ।

ক্ষেত খামারে সোনার ফসল

দেখে হই আনমনা

পাকা ধানের সোনালী রূপ 

কৃষক ভাবে তাই সোনা ।

গর্বে আমার বুক ভরে যায়

জন্মেছি এই দেশে 

জীবন আমার কাটে যেন

দেশকে ভালোবেসে


    খোদার বিধান

সমন্বরে বলেছিল 

আদমের সন্তান

মেনে চলবো মোরা 

তোমার বিধান। 

পৃথিবীতে এসে পরে

সব গেছে ভুলে 

কালেমাটা মুখে বলে 

ধারণ করে না দিলে।

নামাজের কথা লিখা 

আছে পাক কোরানে 

নামাজ পড়েনি কভু 

পাপী  তার জীবনে।

গরীবের হক আছে 

সম্পদে যত 

নষ্ট করেছে বান্দা 

জ্ঞাতসারে তত। 

রমজানে রোজা  রাখার 

বিধান সে মানে না 

জেনে বুঝে পাপ করে 

তবু বলে জানি না।

হজ্বব্রত পালনে 

মন ডাকে পিছু 

করে নেই বাকি আরও

কাজ আছে কিছু।


 আমলনামা

দুই কাঁধে দুই ফেরেশ্তা

লিখছে আমলনামা

ভালো-মন্দ কাজের হিসাব

ডাইরিতে তার জমা।

আল্লাহ মহান বসবেন যখন

বিচারকের আসনে

বলবেন তিনি আমি কাহ্হার

কাল হাসরের ভাষণে।

পাপের কথা জিজ্ঞাসিলে

বলবো যখন নেই মনে

আমার দু’হাত আমার দু,চোখ

স্বাক্ষী দেবে সেইখনে।

পাপী  বান্দার পাপের বোঝা

হবে আরও ভার

ভালো কাজের নেকী যদি

নাইবা থাকে তার।


 পহেলা বৈশাখ

রাত পোহালে দেখবে সবাই 

নতুন বছর শুরু

দুঃখ চাই না কষ্ট চাই না

সুখ যেন পাই পুরো।

বছরজুড়ে ভালো মন্দ

হয়েছে অনেক কিছু 

নষ্ট অতীত আস্তাকুড়ে

ছুটব না তার পিছু।

ভালো পেলাম মন্দ পেলাম

নেই তো সময় ভাবার 

নতুন কিছু করব এবার

শপথ নিলাম আবার।

দুঃখ কষ্ট স্মৃতিগাঁথা 

অতীত হয়ে থাক

মনের যত কালিমা ছিলো

ধুয়ে মুছে যাক।


 দেশি  মাছ 

নদী-নালা ,খাল-বিলে 

হইতো  মাছের চাষ 

ইচ্ছে মতো খাইতাম

চলতো  বারো  মাস । 

ভোজনপ্রিয়  বাঙালির

বাহারি সব খাবার 

দেশি মাছ  প্রিয় ছিলো

ছোট বড় সবার।

ডুবা-নালা ,বিল-ঝিলে

শিং, মাগুর, কই

পুকুর জলে চাষ হইতো 

বাউশ, কাতল, রুই। 

টাকি মাছের ভর্তা

ভেদেরা  মাছ ভাজা 

চিংড়ি মাছের চর্চরি

খাইতে অনেক মজা।

দেশি অনেক স্বাদের মাছ 

যায় না এখন পাওয়া 

বেকায়দায় পড়ে তাই

বিদেশি মাছ খাওয়া। 


      খাদ্যে ভেজাল 

মাছ তরকারি ফলের মাঝে

মেশায় ফর্মালিন 

খাদ্যে ভেজাল এখন যেন

বাড়ছে প্রতিদিন ।

নানান রকম আইন করেও 

হচ্ছে না তা রোধ

লোকের মাঝে কমে গেছে 

নৈতিকতা বোধ।

বেশি লাভের প্রতি লোকের

লোভ বেড়েছে অতি

অসাধু সব বিক্রেতারা 

করছে লোকের ক্ষতি।

খাদ্য এখন নয় নিরাপদ

তবুও খেতে হয়

বিষযুক্ত খাবার খেয়ে

হচ্ছে জীবন ক্ষয়। 


 টাকা

টাকা পয়সা আছে অনেক 

আছে  শক্ত পেশি 

আজকাল এমন লোকের 

কদর অনেক বেশি ।

জুৎচুরি বাটপারিতে 

যাদের আছে দক্ষতা 

তাদের কাছে টাকাই সব 

টাকা থাকলেই সক্ষতা ।

টাকা আছে বলেই তারা

পায় বড় আসন

টাকার গুণে টাকাওয়ালা

করে যায় শাসন।

টাকাওযালার দম্বভারী

সবখানে দেখি 

অবাক হয়ে ভাবি তখন

চলছে দেশে এ কী! 


 মরুর শাসক 

মা আমেনার কোলে এলেন

ভুবন করে আলো 

আরবজাতি  মুক্তি পেলো 

দূর হলো  সব কালো ।

পাননি  যিনি  পিতার সোহাগ 

পাননি  মায়ের আদর

আমার প্রিয় রাসূল তিনি 

সবাই করে কদর।

সবার তরে নিয়ে এলেন 

পাক কোরানের  বাণী 

আরব জাতি সুপথ পেলো

পড়ে কোরানখানি।

শিশুকালেই পেলেন  তিনি

বিশ্বাসী লোক  খ্যাতি 

মরুভূমির  শাসক  তাঁকে

মানলো  আরব  জাতি।


 স্মৃতির পাতা

গ্রামগুলো আগে ছিলো

সবুজে ঘেরা

সুন্দর পরিবেশ আর

সব ছিলো সেরা।

আশেপাশে ছিলো আগে

যত বাড়িঘর

আজ সব বিল্ডিং 

নেই কুঁড়েঘর।

গাছপালা  বাঁশঝার

কেটে করে ফাঁকা

ইট বালি দিয়ে লোকে

বাড়ি বানায় পাঁকা।

ছোট বড় গাছপালা

কেটে বন সারা

শহরের মতো আজ

গ্রামের পাড়া।

পাখিদের কোলাহলে

ভাঙে না ঘুম

পরিবেশ নেই কোথাও

নিরব নিঝুম।

অতীতটা ছিলো ভালো

লোকে  বলে হায় !

সুখ খোঁজে অস্থির

স্মৃতির  পাতায়।


     ভিক্ষা করো না

সৃষ্টির সেরা জীব

তুমি এক জাতি

তবে কেন হাত পাত

অন্যের প্রতি ?

দেহে  যদি থাকে বল

যদি পাও কাজ

ভিক্ষা ছেড়ে  দাও

এক্ষনই আজ।

সৃষ্টির সেরা তুমি

মাথা  রাখ উঁচু

হাত পেতে দান নিলে

মাতা হয় নিচু।

ছোট  কাজ বড় কাজ

করো  না  জ্ঞান

খেটে খেলে যায় না

জাত-কোল  মান।


    আগের মত নই

দিনে-দিনে  বাড়ছে  বয়স

কমছে দেহের  শক্তি

আগের মতো এখন আর

কেউ করে না ভক্তি।

রোগে ভোগে বেঁচে আছি

চোখেও  দেখি  কম

আগের  মতো  নেই শরীরে

বেঁচে  থাকার  দম ।

কালো  চুলের  আগাগোড়া

এখন  সবই  সাদা

কত  নামে ডাকতো  আগে

এখন ডাকে দাদা।

চোখের  পাওয়ার কমে গেছে

আগের মতো  নাই

দাঁতগুলোও  নড়ে এখন

নরম খাবার খাই।

আগের মতো এখন আর

সাধ জাগে না মনে

ভালো  মন্দ কি করেছি

ভাবী  ক্ষণে  ক্ষণে।


বীর বাঙালি 

স্বাধীনতার স্বপ্ন বুকে 

হাতে  নিয়ে মেশিনগান

শত্রু মুক্ত করতে  স্বদেশ

শহীদ হলো লাখো প্রাণ ।

ছাত্র-যুবক আবাল-বৃদ্ধ

সবাই ঝাপিয়ে পড়ে

প্রাণের মায়া ত্যাগ করে 

স্বাধীনতার তরে ।

নয় মাস যুদ্ধ করে

জীবন বাজি রেখে

বীর বাঙালি সাহসী জাতি

বিশ্ববাসী দেখে।

লাখো শহীদের রক্তে ভেজা 

এই দেশের মাটি

দেশের প্রতি ভালোবাসা

থাকতে হবে খাঁটি।


 


কৃষক

কৃষক মাঠে ফলায় ফসল 

আমরা সবাই ভোগ করি

উন্নয়নের অবদানে 

আছে কী আর তার জুরি ?

কাস্তে  হাতে লাঙ্গল কাঁধে 

কৃষক যায় মাঠে 

মনের  সুখে গান গেয়ে 

পাকা  ধান কাটে। 

খোলা  মাঠে তপ্ত রোধে

জড়ায় গায়ের ঘাম 

যারা এত কষ্ট করে 

পায় না তারা দাম ।

রোগে ভোগে কষ্ট করে 

পায় না ওষুধ ঠিক মত

ভূমিহীন হচ্ছে কৃষক 

যাচ্ছে তাদের দিন যত ।


 শহীদ আমার ভাই

পাকসেনারা  হামলা  করে 

পঁচিশে  মার্চ  রাতে 

বীর বাঙালি ঝাপিয়ে পড়ে

লড়াই  বাঁধে তাতে।

এই লড়াইয়ে  শত্রুদলের

হলো  পরাজয়

দেশের  শত্রু  ছিলো  যারা 

পেলো  তারা  ভয়।

এই দেশ এই মাটি 

রক্ত দিয়ে কেনা 

এমন  অনেক  শহীদ  আছে 

নেই  সকলের  চেনা।

ইতিহাসের  পাতায়  যারা

পায়নি  কোন  ঠাই 

তাদের  প্রতিও  শ্রদ্ধা জানাই 

তারাও  মোদের  ভাই।


 শোষণ 

আমরা যারা আমজনতা

সবাই তো আর অন্ধ না

দুর্ণীতিবাজ লুটেরাদের 

করবো কেন বন্দনা।

অট্টালিকায় বসে তারা 

দেশটা  খাচ্ছে  লুটে 

মাদক জুয়া ঘুষ দুর্নীতির

চিত্র ফুটে উঠে। 

দুর্ণীতিবাজ  লুটেরাদের 

করি আমরা তোষণ

এই সুযোগে করছে তারা 

আচ্ছামত শোষণ।

যুদ্ধ করে জয় করেছি

আমরা এমন জাতি 

তবে কেন আজকে দেশের

এমন পরিনতি।


 আল কোরানের আলো

তোমার কাজে কর্মে যদি 

জানায় লোকে ধিক্ষার 

তবে  বলো কী দাম আছে

তোমার এমন শিক্ষার ?

ডিগ্রীধারী হলেই কেবল

হয় কি মানুষ ভালো ?

থাকতে হবে তার মধ্যে

সুশিক্ষার আলো।

শিক্ষিত লোক দুর্ণীতিবাজ 

গর্ব করার নাই কিছু 

আরো কিছু অসৎ লোক

ঘুরে দেখি তার পিছু। 

মন থেকে মুছে ফেল 

কুশিক্ষার কালো 

ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দাও

আল কোরানের আলো।


 কদরের রাত্রী 

এক এক করে দিন 

চলে চলে যায় মাস 

রোজাদার গরমে 

করে হাঁসফাস।

কিভাবে যে দিন যায়

যায় না বুঝা 

খোদাভীতি থাকলে 

রোজা রাখা সোজা।

রহমতের দশ দিন 

হয়ে গেলে পার

মাগফিরাতের দশ দিন 

এসে  যায় তার।

নাজাতের দশ দিনে 

কদরের রাত্রী 

ক্ষমা চায় মুসলিম

কেঁদে সারারাত্রী। 

অতীতে মুমিনের 

যত পাপ জমা

খুশি হলে স্রষ্টা 

করে দেয় ক্ষমা।


 বঞ্চিতজন

ফিন্নি পায়েস খাচ্ছ ঈদে

কত কিছু দিয়ে

বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়াও 

একটা কিছু নিয়ে।

গরিব দুখী মানুষ যারা 

পায় না ভালো খাবার

সাধ্যমত চেষ্টা কর 

তাদের কিছু দেবার।

তোমার দানে তাদের মুখে 

ফুটবে সুখের হাসি 

আল্লাহ মহান তোমার প্রতি

হবে অনেক খুশি ।


 নামাজ

রাতের আঁধার দূর হয়েছে

সুব্হে সাদিক ভোর

মোয়াজ্জিনের কণ্ঠে শোন

আযান সুমধুর।

ঘুমের চেয়ে নামাজ ভালো

বলছে মোয়াজ্জিন

এমনি করে নামাজ পড়তে

ডাকে প্রতিদিন।

রাতের বেলায় সজাগ থেকে

দিনের বেলায় ঘুমকাতর

সকাল সকাল ঘুম ভাঙে না

ঘুম ভাঙতে হয় দুপুর।

ফজর নামাজ পড়তে হবে

সূর্য উঠার আগে

শরীর মন থাকবে ভালো

অলসতা ত্যাগে।


 কী গরম বাপরে!

দিনে দিনে বাড়ছে 

সূর্যের তাপরে

কী  গরম লাগছে

বাপরে ! বাপরে !

গরমেতে হাঁসফাঁস 

লাগে বড় কষ্ট

মাঠ ফেটে চৌচির 

ফসলাদি নষ্ট ।

মাঠ-ঘাট পুড়ছে 

কী যে অনাসৃষ্টি 

এ সময়ে যদি আসে

খানিকটা বৃষ্টি ।

সারা দেহ জ্বলছে 

স্বস্তিটা পেতে তাই 

মৃদু মন্দ মলয়

কোথায় খোঁজে পাই।

এসময়ে প্রয়োজন

এক ঝাক বৃষ্টি

আকাশের দিকে তাই

সকলের দৃষ্টি।


 খোকন সোনা

 

 খোকন সোনা  রাগ  করেছে

 মুখ করেছে ভার

কেউ কী তোমরা বলতে পার

কি হয়েছে তার ? 

চাঁদের হাসি ম্লান  করে 

খোকার  হাসির ঝলক 

খিলখিলিয়ে হাসে খোকা 

পড়ে  না তাই পলক ।

কে বলেরে মন্দ খোকা

কার হয়েছে কাল 

হাসি-খুশি খোকন সোনা 

থাকবে  চিরকাল ।


 সংস্কৃতি

সংস্কৃতি আজ বদলে গেছে

বদলে গেছে সবই

ভিনদেশি গান খ্রিস্টি-কালচার 

এই প্রজন্মের হবি।

হা-ঁডু-ডু আর দাঁড়িয়াবান্দা

খেলে না আজ কিশোর

ফেইসবুক আর ইউটিউব

মন কেড়েছে শিশুর।

এখন তো আর বিয়েবাড়ি

গায় না বিয়ের গীত 

যায় না শোনা কোথাও

উচ্চাঙ্গ সংগীত। 

পালকিচড়ে নববধূ 

যায় না শ্বশুর বাড়ি

যানবাহন বদলে গেছে

দেখি না ঘোড়ার গাড়ি। 

এখন তো আর কারও বাড়ি

হয় না পুথি পাঠ 

এই প্রজন্মের মন কেড়েছে 

পপ সম্রাট ।

লেটু গানের আসর এখন 

হয় না কোনখানে 

কত মধুর সুর ছিলো

ভাটিয়ালি গানে ।


 পাড়ার ছেলে 

পাড়ার ছেলে নষ্ট হলে

কার কী যায় আসে

ভালো ছেলে ঘুরে দেখ 

নষ্ট ছেলের আশপাশে ।

নিরাপদে যায় না থাকা 

নষ্ট ছেলের উৎপাতে

পিতা-মাতা প্রতিবেশির 

আছে অনেক দায় তাতে।

সন্ত্রাসী আর পাচার কাজে

হচ্ছে তারা লাটিয়াল 

অস্ত্র নিয়ে ধরা পড়লে

দেখ চেয়ে তাদের হাল ।

সন্ত্রাসী আর মানুষ খুনে

তাদের অনেক হাত পাকা 

সহিংসতায় জড়িয়ে যায় 

হামেশা তাই যায় দেখা ৷

সুখী সমাজ গড়তে হলে

রুখতে হবে এদের 

নিজের ছেলে পাড়ার ছেলে

আছে এমন যাদের ।



 কোচিং বাণিজ্য 

আয়রে খোকা আয়রে খোকী

বিদ্যালয়ে যাই 

বিদ্যাশিক্ষার বিকল্প পথ

অন্য কোথাও নাই । 

সারাদেশে কোচিং সেন্টার

আছে কত নামে

শিক্ষা নিয়ে বানিজ্য হয় 

অনেক টাকা দামে ।

স্কুল কলেজে পাঠ দানে 

আগ্রহী  নন গুরু

কোচিং খোলে ব্যবসা তিনি 

করছেন তাই শুরু।


 নদী বাঁচাও 

নদী রক্ষার আইন করেছে

দেশের সরকার যদিও 

দখলদার ভূমি দস্যু 

করছে দখল নদীও ।

নদীর তীর দখল করে 

বানায় ঘর-বাড়ি

খরস্রোতা  নদী এখন 

হেঁটেই দেয় পারি।

আগাম বন্যা তীব্র খড়ায়

ফসল হয় নষ্ট 

যারা জমি চাষ করে খায়

তাদের বাড়ে কষ্ট । 

নদী শাসন বন্ধ হবে

বিবেক জাগে যদি 

দেশের ভালো চাইলে 

বাঁচাতে হবে নদী।

তিস্তা নদীর ন্যায্য পানি 

আমরা কি আর পাই ? 

এখন থেকে পানির 

ন্যায্য হিস্যা আমরা চাই ।


 ফুলের মেলা

শরৎ শেষে হেমন্তকাল

আসল সবার মাঝে

গাছের ডালে শিউলি ফোটে

সাজল দারুণ সাজে।

বকুল ফুলের শুভ্র রূপে

সেজে আছে ডালপালা

রমণী  তাই বসে গাঁথে

বকুল ফুলের সেই মালা।

গন্ধরাজের শুরভীতে

মন হয়ে যায় আনমনা

পাকা  ধানের সোনালী  রূপ

দেখে ভাবি তাই সোনা।


 শ্রমিক

কষ্টে যাদের জীবন কাটে

রোদ বৃষ্টি ঝড়ে

পেট ভরে পায় না খেতে

থাকে অনাহারে।

ক্ষেত খামারে কাজ করে

করে জমি চাষ

অনাহারে অর্ধাহারে

কাটে  বারো মাস।

কেউ আবার কুলি মজুর

টানে পরের বোঝা

জীবন তাদের বড় কঠিন

নয় তেমন সোজা।

শ্রমজীবী এসব লোকের

নেই লেখা পড়া

এই পৃথিবীর অনেক কিছু

তাদের হাতে গড়া।



 



বর্ষা-বাদল

আষাঢ় মাসে বাদল নামে

সারাদিন বৃষ্টি হয়

খেটে খাওয়া মানুষগুলোর

তখন বড় কষ্ট হয়। 

মেঘ বৃষ্টি বর্ষা বাদল

প্রয়োজন তার জানি

অতিবৃষ্টি হলে জমে

সবখানেতে পানি।

অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টি কারও

মোটেও কাম্য নয়

পাপচার বাড়লে দেশে

তবেই নাকি এমন হয়।

নূহ (আঃ) জাতি ধ্বংস হয়

কালের মহা প্লাবনে

ইতিহাসের কঠিন সত্য

সকল মানুষ তাই জানে।

অনাবৃষ্টি তীব্র গরম

ফেরাউন হয় নাজেহাল

অবশেষে বৃষ্টি হলেও

পানি দেখে রক্তলাল।